কলাপাড়ায় বসতঘর থেকে দুটি কালনাগিনী সাপ উদ্ধার

- আপডেট সময় : ০৬:০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একটি বসতঘর থেকে দুটি মৃদু বিষধর কালনাগিনী সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। সাপগুলো প্রাপ্তবয়স্ক এবং এর এক একটির দৈর্ঘ্য প্রায় দুই ফুট।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের দিত্তা গ্রামের কৃষক জব্বার মুন্সীর বসতবাড়ি থেকে এনিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর সদস্যরা সাপ দুটি উদ্ধার করে।পরে দিত্তা গ্রামের সংরক্ষিত বনে সাপ দুটি অবমুক্ত করা হয়। এ সময় কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদেক উপস্থিত ছিলেন।
অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর সদস্য মাসুদ হাসান বলেন, দুপুরে কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের দিত্তা গ্রামের জব্বার মুন্সির বাড়িতে সাপ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে আমাদের খবর দেওয়া হলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদেকের নেতৃত্বে সেখানে গিয়ে সাপ দুটি উদ্ধার করি। তবে সাপগুলো কোনো ধরনের আহত না হওয়ায় অবমুক্ত করা হয়েছে।
অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার টিম লিডার বায়জিদ মুন্সী বলেন, এ সাপগুলোর বাংলা নাম কালনাগিনী সাপ। গ্রাম্য ভাষায় সুন্দরী নামেও ডাকা হয়। দুপুরে সাপ দুটি উদ্ধার করি। আসলে মানুষের জন্য এ প্রাণী ক্ষতিকর নয়। এছাড়া বেশিরভাগ সাপই মানুষের জন্য উপকারী। কিন্তু আমরা না বুঝে বিষমুক্ত অনেক সাপ মেরে ফেলি। এ কাজ আমাদের পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। তবে যেকোনো স্থানে সাপ দেখা গেলে আমাদের খবর দিলেই সেগুলো আমরা উদ্ধার করব। শুধু সাপ নয় আমরা বিপদগ্রস্ত সব প্রাণীর পাশে দাঁড়াব।
কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদেক বলেন, এনিমেল লাভারস অব পটুয়াখালী সংগঠনটির সহায়তায় দুটি সাপ উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর আগে সকালে ১০টি ঘুঘুও ছাড়া হয়। পরিবেশবাদী এ সংগঠনটিকে সব সময় সহযোগিতা করা হবে।
এদিকে কাল নাগিনী সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, দেশে পাওয়া দৃষ্টিনন্দন সাপগুলোর মধ্যে কাল নাগিনী (Ornate Flying Snake) অন্যতম। অঞ্চলভেদে সাপটিকে উড়াল সাপ, সুন্দরী সাপ, কাল সাপ ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। ইংরেজি নামের সঙ্গেও ‘ফ্লাইং স্নেক’ রয়েছে, তবে সাপটি মোটেও উড়তে পারে না। এটি গাছের উঁচু ডাল থেকে নিচু ডালে লাফিয়ে নামে। কাল নাগিনী দিবাচর ও শান্ত স্বভাবের সাপ। খুব বেশি বিরক্ত না হলে কামড়ায়ও না। এরা গিরগিটি, বাঁদুড়, ইঁদুর, ছোট পাখির ডিম ও কীটপতঙ্গ খায়। এরা সাধারণত পোকামাকড়, টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ ও ছোট পাখি ইত্যাদি খায়। সাধারণত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। সাপটি একবারে ৬-১২ টি ডিম পাড়ে যা থেকে দুইমাস পর বাচ্চা ফোটে।