ঢাকা ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গোপালগঞ্জে সনাতন ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করায় হামলা, অত্যাচার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালাবদ্ধ করার -প্রতিবাদে সংবাদ-সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীতুবা আলমগীর ইসলাম ধর্ম ও রাসুলুল্লাহ (সাঃ)কে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত। গোবিন্দগঞ্জে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মশালা অনুষ্ঠিত পাটগ্রাম সীমান্তে দিয়ে ফের শিশুসহ ৭জনকে বিএসএফের পুশইন। সিএসএস-এমএফপি’র আয়োজনে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা লালমনিরহাটের বাঁশ শিল্পীরা অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। সনাতন ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করায় হামলা কলাপাড়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, কলাপাড়া শ্রমিক দল  নেতা সোহেল দেওয়ানকে বহিষ্কার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ,অনৈতিক কার্মকান্ডে জড়িত থাকায় সোহেল দেওয়ান কে শ্রমিক দলের সদস্য পদ ও সাংগঠনিক পদ থেকে ষ্কার করা হয়েছে।
সংবাদ শিরোনাম ::
গোপালগঞ্জে সনাতন ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করায় হামলা, অত্যাচার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালাবদ্ধ করার -প্রতিবাদে সংবাদ-সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীতুবা আলমগীর ইসলাম ধর্ম ও রাসুলুল্লাহ (সাঃ)কে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত। গোবিন্দগঞ্জে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মশালা অনুষ্ঠিত পাটগ্রাম সীমান্তে দিয়ে ফের শিশুসহ ৭জনকে বিএসএফের পুশইন। সিএসএস-এমএফপি’র আয়োজনে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা লালমনিরহাটের বাঁশ শিল্পীরা অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। সনাতন ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করায় হামলা কলাপাড়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, কলাপাড়া শ্রমিক দল  নেতা সোহেল দেওয়ানকে বহিষ্কার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ,অনৈতিক কার্মকান্ডে জড়িত থাকায় সোহেল দেওয়ান কে শ্রমিক দলের সদস্য পদ ও সাংগঠনিক পদ থেকে ষ্কার করা হয়েছে।

মহিপুরে পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরির কার্যক্রমে স্বাবলম্বি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ ২৮ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ঝুঁকির মুখে থাকা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই জীবিকার লক্ষ্যে পটুয়াখালীর মহিপুরসহ বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে “ধরিত্রী” বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরী ও বাজারজাতকরণ প্রকল্প।

ক্যাথলিক এজেন্সি ফর ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট এর অর্থায়নে এবং কারিতাস বাংলাদেশের বাস্তবায়নে প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২৫ মেয়াদে। এটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়ন ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নে চালু রয়েছে।

প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে পরিবেশবান্ধব কৃষি অনুশীলনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও দরিদ্র কৃষকদের জন্য টেকসই আয়ের পথ তৈরি করা এবং নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা।

প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত ৬৯৪ জন সরাসরি উপকারভোগী হয়েছেন, যার মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী। পরোক্ষভাবে উপকারভোগী হয়েছেন আরও ২ হাজার ৪৬৭ জন, যারা জৈবসার ব্যবহার, পরিবেশবান্ধব কৃষি, ও বাজার সংযোগের সুবিধা পাচ্ছেন।

এ পর্যন্ত ২৮০ জন কৃষক কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন ও বিক্রয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট কেঁচো সার ১৪টি বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বাজারজাত করা হচ্ছে।

প্রকল্পের ‘ভার্মি গ্রুপ’ নামক উদ্যোগের মাধ্যমে ১০টি দলে ভাগ করে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বৈঠক ও অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মসূচি চালু রয়েছে। এ পর্যন্ত ৯৩ জন কৃষককে কেঁচো সার উৎপাদনে সহায়তা হিসেবে ৫,০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, ফসল ও সবজি চাষে ১৩৫ জন কৃষক পেয়েছেন ৩,৫০০ টাকা করে অনুদান এবং ৪ জন নারী উদ্যোক্তাকে নারী কর্নার স্থাপনের জন্য দেয়া হয়েছে ২৩,৫২৫ টাকা করে।

উদ্যোক্তাদের কণ্ঠে সাফল্যের গল্প

পুরান মহিপুর গ্রামের মোসাঃ পারভিন বেগম বলেন, “আমার নয় সদস্যের পরিবারের উপার্জনের কেউ ছিল না। কারিতাস মহিপুর অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করি। পরে তারা আমাকে ৩,৫০০ টাকা সহায়তা দেয়। এখন শাকসবজি চাষ করে প্রতি মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করি।”

মনোহরপুর গ্রামের মায়া রানী জানান, “তিনটি চারি ও পাঁচটি রিং ব্যবহার করে কেঁচো সার উৎপাদন করি। এতে মাসে ১০-১২ হাজার টাকা আয় হয়।”

বিপিনপুর গ্রামের হেনা বেগম জানান, “অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকলেও কারিতাসের ২৩,৫২৫ টাকা সহায়তা পেয়ে একটি দোকান শুরু করেছি। এখন সংসার ভালোভাবে চালাতে পারছি।”

ধরিত্রী ও একরাব প্রকল্পের জুনিয়র কর্মসূচি কর্মকর্তা মি: জর্জ বৈরাগী, বলেন, “ধরিত্রী” প্রকল্প চলমান রেখে পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারলে অর্থনৈতিক ভাবে মানুষকে স্বাবলম্বী করা সম্ভব”

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ আলী বলেন, “কারিতাসের উদ্যোগে মহিপুরের প্রান্তিক কৃষকরা রাসায়নিক সার ও কীটনাশক পরিহার করে কেঁচো সার ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। এ ধরনের কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া উচিত।”

সম্ভাবনার দিগন্ত

প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ৬৯৪ টি পরিবারের মাসিক আয় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে পরিবেশবান্ধব কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে একটি স্থায়ী ভিত্তি তৈরি হচ্ছে, যা নতুন কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মহিপুরে পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরির কার্যক্রমে স্বাবলম্বি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী

আপডেট সময় : ০৮:৫৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ঝুঁকির মুখে থাকা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই জীবিকার লক্ষ্যে পটুয়াখালীর মহিপুরসহ বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে “ধরিত্রী” বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরী ও বাজারজাতকরণ প্রকল্প।

ক্যাথলিক এজেন্সি ফর ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট এর অর্থায়নে এবং কারিতাস বাংলাদেশের বাস্তবায়নে প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২৫ মেয়াদে। এটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়ন ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নে চালু রয়েছে।

প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে পরিবেশবান্ধব কৃষি অনুশীলনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও দরিদ্র কৃষকদের জন্য টেকসই আয়ের পথ তৈরি করা এবং নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা।

প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত ৬৯৪ জন সরাসরি উপকারভোগী হয়েছেন, যার মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী। পরোক্ষভাবে উপকারভোগী হয়েছেন আরও ২ হাজার ৪৬৭ জন, যারা জৈবসার ব্যবহার, পরিবেশবান্ধব কৃষি, ও বাজার সংযোগের সুবিধা পাচ্ছেন।

এ পর্যন্ত ২৮০ জন কৃষক কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন ও বিক্রয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট কেঁচো সার ১৪টি বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বাজারজাত করা হচ্ছে।

প্রকল্পের ‘ভার্মি গ্রুপ’ নামক উদ্যোগের মাধ্যমে ১০টি দলে ভাগ করে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বৈঠক ও অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মসূচি চালু রয়েছে। এ পর্যন্ত ৯৩ জন কৃষককে কেঁচো সার উৎপাদনে সহায়তা হিসেবে ৫,০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, ফসল ও সবজি চাষে ১৩৫ জন কৃষক পেয়েছেন ৩,৫০০ টাকা করে অনুদান এবং ৪ জন নারী উদ্যোক্তাকে নারী কর্নার স্থাপনের জন্য দেয়া হয়েছে ২৩,৫২৫ টাকা করে।

উদ্যোক্তাদের কণ্ঠে সাফল্যের গল্প

পুরান মহিপুর গ্রামের মোসাঃ পারভিন বেগম বলেন, “আমার নয় সদস্যের পরিবারের উপার্জনের কেউ ছিল না। কারিতাস মহিপুর অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করি। পরে তারা আমাকে ৩,৫০০ টাকা সহায়তা দেয়। এখন শাকসবজি চাষ করে প্রতি মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করি।”

মনোহরপুর গ্রামের মায়া রানী জানান, “তিনটি চারি ও পাঁচটি রিং ব্যবহার করে কেঁচো সার উৎপাদন করি। এতে মাসে ১০-১২ হাজার টাকা আয় হয়।”

বিপিনপুর গ্রামের হেনা বেগম জানান, “অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকলেও কারিতাসের ২৩,৫২৫ টাকা সহায়তা পেয়ে একটি দোকান শুরু করেছি। এখন সংসার ভালোভাবে চালাতে পারছি।”

ধরিত্রী ও একরাব প্রকল্পের জুনিয়র কর্মসূচি কর্মকর্তা মি: জর্জ বৈরাগী, বলেন, “ধরিত্রী” প্রকল্প চলমান রেখে পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারলে অর্থনৈতিক ভাবে মানুষকে স্বাবলম্বী করা সম্ভব”

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ আলী বলেন, “কারিতাসের উদ্যোগে মহিপুরের প্রান্তিক কৃষকরা রাসায়নিক সার ও কীটনাশক পরিহার করে কেঁচো সার ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। এ ধরনের কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া উচিত।”

সম্ভাবনার দিগন্ত

প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ৬৯৪ টি পরিবারের মাসিক আয় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে পরিবেশবান্ধব কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে একটি স্থায়ী ভিত্তি তৈরি হচ্ছে, যা নতুন কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।