ঈদের ছুটির চতুর্থ দিনে পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

- আপডেট সময় : ০৪:২৩:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
ঈদুল আজহার টানা ১০ দিনের ছুটি যেন বদলে দিয়েছে ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটার চিত্রপট। পটুয়াখালীর এই অপরূপ সমুদ্রসৈকত এখন পর্যটকের পদচারণায় সরগরম। ঈদের দিন থেকেই শুরু হওয়া পর্যটকদের ঢল চতুর্থ দিনেও অব্যাহত রয়েছে। প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করেও সৈকতের নোনাজলে গা ভিজিয়ে স্বস্তি খুঁজে নিচ্ছেন হাজারো ভ্রমণপিপাসু মানুষ। ঢেউয়ের উন্মাদনা, হালকা বাতাস আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে পড়ছেন তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শুধু মূল সৈকত নয়, আশপাশের গঙ্গামতির চর, কাউয়ার চর, রাখাইন পল্লী, শুঁটকিপল্লী, লেম্বুর বন, ফাতরার বন ও বৌদ্ধবিহার—প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে উপচে পড়া ভিড়। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠী কিংবা সহকর্মীদের সঙ্গে দলবেঁধে আসা পর্যটকদের আনাগোনায় উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। কেউ সেলফিতে মগ্ন, কেউ সমুদ্রের ঢেউয়ে দোল খাচ্ছেন, আবার কেউবা প্রকৃতির কোলে বসে খুঁজে নিচ্ছেন প্রশান্তি।
দীর্ঘদিন পর এমন জমজমাট কুয়াকাটা দেখে খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও। হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট, ফুচকা-ঝালমুড়ি, হস্তশিল্প ও শুঁটকিসহ প্রায় প্রতিটি খাতে বেড়েছে বেচাকেনা। অনেক ব্যবসায়ীর ভাষ্য, এমন পর্যটক সমাগম বহুদিন পর দেখা গেছে, যা কুয়াকাটার অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তারা আশাবাদী।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ জানান, ঈদ মৌসুমে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ হোটেল-গেস্ট হাউস পূর্ণ রয়েছে। এরকম উৎসবমুখর পরিবেশ অনেক দিন পর দেখা গেল।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক হাবিবা ইসলাম বলেন, শুধু সমুদ্র নয়, আশপাশের পর্যটন স্পটগুলোও দারুণ লেগেছে। গরম ছিল বটে, তবে সাগরের কাছাকাছি এসে মনে হয়েছে, যেন প্রকৃতি আপন করে নিচ্ছে।
রাজশাহী থেকে পরিবার নিয়ে আসা পর্যটক হাসিবুর রহমান জানান, কুয়াকাটা এখন অনেক নিরাপদ, আর সবকিছু সুন্দরভাবে ব্যবস্থাপিত।
পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক)। সংগঠনের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, এমন পর্যটক প্রবাহ অব্যাহত থাকলে কুয়াকাটায় নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে, যা কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে। পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে মহিপুর থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান জানান, শুধু সৈকত নয়, আশপাশের প্রতিটি দর্শনীয় স্থানেও মোবাইল টিম কাজ করছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি তথ্য সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কোন ধরনের আপত্তিকর ঘটনা এড়াতে সৈকত জুড়ে সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে।