কলাপাড়ায় ব্রিজ ভেঙে খালের পানিতে বিলীন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ১০ টি গ্রাম

- আপডেট সময় : ০৪:১৩:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫ ৭২ বার পড়া হয়েছে
পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের তাহেরপুর ও আজিমপুর গ্রামের মাঝখানে অবস্থিত লক্ষীর খালের উপর নির্মিত পুরনো আয়রণ ব্রিজটি সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়ে খালের পানিতে বিলীন হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে) ভোররাতে হঠাৎ বিকট শব্দে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে যায়।
যদিও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, তবে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করা এই ব্রিজটি একেবারে ধসে পড়ায় দুই পাশের অন্তত ১০টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন কুয়াকাটাগামী পর্যটকরাও।
২০০১ সালে নির্মিত ব্রিজটি বছরের পর বছর লবণাক্ত পানির সংস্পর্শে পড়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। নিচের লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচায় নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে ব্রিজটি ২০২১ সালেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তবুও এলাকাবাসী কাঠের তক্তা বিছিয়ে অস্থায়ীভাবে পারাপার চালু রাখে।
গত বছরের ১১ আগস্ট এক ব্যবসায়ী সারবোঝাই টমটম নিয়ে ব্রিজ পার হওয়ার সময় দক্ষিণাংশ ভেঙে পড়ে। তখনই কাঠের তক্তা দিয়ে সংস্কার করা হলেও সেটিই ছিল শেষ আশ্রয়। রোদ-বৃষ্টি আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আজকের ভোরে সেটিও শেষবারের মতো ধসে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলামিন হোসেন বিপ্লব বলেন, “বছরের পর বছর ধরে আমরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। আজকে ব্রিজটা একেবারে খালে পড়ে গেছে। এখন আর কোনও পথ নেই। নতুন একটি ব্রিজ ছাড়া বিকল্প নেই।”
স্থানীয় বাসিন্দা হাজেরা বেগম বলেন, “আমাদের ডাক্তার দেখাতে আলিপুর যেতে হয় এই ব্রিজ পার হয়ে। আজ সকালে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর আমাদের দুর্ভোগের এখন শেষ নেই। বয়স্ক ও গর্ভবতী মেয়েরা হাসপাতালে যেতে অনেক সমস্যা হবে। এজন্য আমরা চাই দ্রুত বৃষ্টি নির্মাণ করা হোক।”
আজিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ তরিকুল সরদার বলেন, “ঝুঁকি নিয়ে পার হতাম। এখন তো স্কুলে যেতেও পারছি না। কষ্ট হচ্ছে অনেক।”
এ বিষয়ে এলজিইডি’র কলাপাড়া উপজেলার প্রকৌশলী মো. সাদিকুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং সরেজমিনে তদন্ত করে দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব। অতি শিগগিরই ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এলাকাবাসীর চলাচল, শিক্ষার্থী ও কৃষকের জীবনজীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।